আনোয়ার সাঈদ তিতু (কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি)
প্রধান শিক্ষিকার বরখাস্ত ও শাস্তির দাবিতে কুড়িগ্রাম সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন রবিবারও অব্যাহত ছিল। শিক্ষা কার্যক্রম বয়কট করে সকাল থেকে বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ করে অবস্থান কর্মসূচি এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও সহ দিনভর আন্দোলনে প্রকম্পিত ছিল জেলা শহর। শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার বিকালে প্রধান শিক্ষক রুখসানা পারভীনকে শ্বশুরালয় জেলা লালমনিরহাটে বদলির আদেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে রবিবার বিকালে প্রধান শিক্ষক রুখসানা পারভীনকে লালমনিরহাট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে বদলির আদেশ দেয় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর। তবে বদলির আদেশ প্রত্যাখ্যান করেছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তারা বলছে, আমাদের দাবি প্রধান শিক্ষক রুখসানা পারভীনকে বরখাস্ত করে তার দুর্নীতি ও অনিয়মের তদন্ত করতে হবে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তাকে নিজ বাসস্থানের কাছের স্কুলে বদলি করে পুরস্কৃত করেছে। আমরা এমন সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করছি।
রবিবার দিনভর আন্দোলন করে বিকালে জেলা প্রশাসক চত্বর থেকে এমন সিদ্ধান্ত জানায় আন্দোলনকারীরা। পরে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে ঘরে ফিরে যায় তারা। এ সময় তাদের সঙ্গে অভিভাবক ও শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন। শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষক রুখসানা পারভীনের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা, স্বৈরাচারী আচরণ এবং দুর্নীতি ও অনিয়মের নানা অভিযোগ তুলে তাকে অপসারণের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে। স্কুলের প্রশাসনিক ভবনসহ বিভিন্ন কক্ষে তালা লাগিয়ে সব ধরনের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
প্রধান শিক্ষককে বরখাস্তসহ তার দায়িত্বকালে গত ১৫ বছরের স্কুলের আয়-ব্যয়ের হিসাব প্রদানের দাবি জানিয়েছে তারা। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন আঁচ করতে পেরে গা ঢাকা দিয়েছেন প্রধান শিক্ষক। কয়েকদিন ধরে তিনি স্কুলে অনুপস্থিত। তার অনুপস্থিতিতেই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে স্কুলটির কয়েকশ শিক্ষার্থী।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও স্কুলটির কয়েকজন শিক্ষক বলেন, বদলি শাস্তি নয়। বরং বাসস্থানের কাছে বদলি করে তাকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। আমরা এমন আদেশ প্রত্যাখ্যান করছি। রুখসানা পারভীনকে তার কৃতকর্মের জন্য বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। এজন্য তাকে বরখাস্ত করতে হবে। পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলাসহ দুর্নীতি দমন আইনে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায় শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফিরে যাবে না। দাবি আদায় না হলে আরও কঠোর অবস্থান নেওয়া হবে। মঙ্গলবার সকাল থেকে আবারও অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, প্রধান শিক্ষককে বদলির আদেশ দিলেও শিক্ষার্থীরা তা প্রত্যাখ্যান করেছে। শিক্ষার্থীদের সিদ্ধান্ত এবং দাবির বিষয়গুলো কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’