ঝুঁকি ছাড়াই বেশি লাভ, কচুলতি চাষে ঝুঁকছেন কৃষকেরা
নিজস্ব প্রতিবেদক
অন্য ফসলের চেয়ে চারগুণ বেশি লাভজনক হওয়ায় কচুলতি চাষে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীর কৃষকরা। এই ফসলে কোনো ঝুঁকি না থাকায় বাণিজ্যিকভাবে কচুলতি চাষ করছেন এখানকার স্থানীয় কৃষকরা। কচু খেত থেকে বাড়তি ফসল হিসেবে যায় লতি। এটি গরীবের সবজি হিসাবে বেশ পরিচিত।
স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কচু গাছের বহুমুখি ব্যবহার হয়। প্রথমতো কচুর পাতা সবজি হিসেবে খাওয়া যায়, কচুর শক্ত শরীর ও কচুর লতি পুষ্টিকর তরকারি হিসেবে এবং কচুর গাছ থেকে মূল বা চারা হিসেবেও বিক্রি করা যায়। সঠিক পরিচর্যায় ও সব খরচ বাদে এক বিঘা জমিতে কচুলতি আবাদে প্রতি মৌসুমে অনায়াসে দেড় লাখ টাকা লাভ করা যায় কোনো ঝুঁকি ছাড়াই। স্থানীয় বাজারে প্রতি মণ কচুলতি ১৮‘শত থেকে ২ হাজার টাকা দরে পাইকারি বিক্রি হচ্ছে। যা সরবরাহ করা হচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, ২০ হেক্টর জমির উপরে কচুলতি চাষ হচ্ছে উপজেলায়। স্থানীয়ভাবে লতিরাজ জাতের কচু অনেকের কাছে জনপ্রিয় সবজি। ক্রমাগত চাহিদা বৃদ্ধি ও ভালো বাজারমূল্য পাওয়ায় উপজেলার বিভিন্œ এলাকার কচুলতি চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে। কৃষি বিভাগের প্রয়োজনীয় সার্বিক সহযোগিতায় কচুলতি চাষ ভালো হয়েছে এবার।
মুশুদ্দি এলাকার কৃষক আল-আমিন বলেন, ‘ঝামেলা কম ও কম খরচে কচুলতি চাষ করা যায়। এতে কীটনাশকের প্রয়োজন হয় না। গরু ছাগল কচু খায় না এবং তা দেখাশোনার জন্য বাড়তি কোনো লোকেরও প্রয়োজন হয় না।’
এই কৃষক আরও বলেন, ‘চারা রোপণের আড়াই মাসের মধ্যে লতি আসে। যা টানা ৭ মাস বিক্রি করতে পারি। ১ বিঘা জমিতে রোপণ থেকে শুরু করে বিক্রি পর্যন্ত ৩০-৩৫ হাজার টাকার মতো খরচ হয়। প্রতি সপ্তাহে ১৫-২০ হাজার টাকার লতি স্থানীয় হাটে বিক্রি করতে পারি। প্রতি কেজি লতি ৪৫-৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা যায়।’
‘কৃষণী জাবেদ বেগম বলেন, আমি চলতি মৌসুমে ৩৩ শতক জমিতে কচুলতি চাষ করেছি। এতে অনেক লাভ করেছি যা অন্য কোনো ফসল থেকে সম্ভব নয়। তাই আগামীতে কৃষি অফিসের পরামর্শে দ্বিগুণ জমিতে কচুলতি চাষ করবো।’
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফরিদ আহমেদ বলেন, ‘বর্তমানে কচুর চেয়ে লতির চাহিদা বেশি। বিঘা প্রতি ৯০ থেকে ১০০ মণের উপরে লতি পাওয়া যায়।’
কৃষি কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান বলেন, ‘বর্তমানে উপজেলার কৃষকরা অধিক লাভজনক কচলতিু চাষের দিকে ঝুঁকছেন। আগ্রহী কৃষকদের মাঝে উচ্চ ফলনশীল কচুর চারা সরবরাহ করাসহ সার্বিক সহযোগিতা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও কচুলতি চাষে জমির উর্বরতা শক্তিও বৃদ্ধি পায়।’