আঃ রহিম (রংপুর প্রতিনিধি)
রংপুরের গঙ্গাচড়ার একটি ফাযিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও সহকারী মৌলভি শিক্ষকের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্য ও পকেট কমিটি করার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল সকাল ১১টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত পাগলাপীরের সলেয়াশাহ বাজার সংলগ্ন লালচাঁদপুর খায়রুল উলুম বহুমুখী ফাযিল মাদ্রাসায় অধ্যক্ষ আবুল খায়ের একরামুল হক, ও সহকারী মৌলভি শিক্ষক শহিদুল ইসলামের অপসারণ ও নিয়োগ বাণিজ্যের নামে আত্নসাৎকৃত অর্থ ফেরতের দাবিতে মাদ্রাসার সামনে প্রতারিত হওয়া এলাকাবাসী, মাদ্রাসার সাবেক শিক্ষার্থী, বর্তমান শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা সম্মিলিতভাবে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন।
স্থানীয় ব্যাক্তিবর্গ ও মাদ্রাসার একাধিক শিক্ষক জানায়, একজন অধ্যক্ষ থাকার পরেও তিনি একজন জুনিয়র শিক্ষক হয়ে, নিজের মনমত করে পকেট ম্যানেজিং কমিটির মাধ্যমে মাদ্রাসা পরিচালনা করে আসতেছেন সহকারী মৌলভী শিক্ষক শহিদুল ইসলাম। মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সহ সভাপতি ও সাবেক ইউপি সদস্য নুরুল ইসলাম জানান, ২০১৪ সালে অধ্যক্ষ সাময়িক সাসপেন্ড হওয়ার পর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হয়েছিলেন সহকারী মৌলভী শিক্ষক শহিদুল ইসলাম।
সে সময় থেকেই অদ্যাবধি পর্যন্ত মাদ্রাসায় অবৈধ নিয়োগ থেকে শুরু করে কমিটিতে নিজের লোক বসিয়ে প্রতিষ্ঠানে অনিয়মের রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে মৌলভী শিক্ষক শহিদুল ইসলাম। শিকক্ষ ও এলাকাবাসীরা সাংবাদিককে জানান মাদ্রাসার ফান্ডে কোন টাকা নেই। প্রতিটি পদে একজন করে লোক নিয়োগ দিলেও টাকা নিয়েছে ৩ জনের কাছ থেকে। এভাবে পারস্পরিক যোগসাজশে প্রায় ১ কোটি ৭৬ লক্ষ টাকার মতো আত্মসাৎ করেছে মৌলভী শিক্ষক শহিদুল ইসলাম ও অধ্যক্ষ আবুল খায়ের একরামুল হক। আমরা এই দুর্নীতিগ্রস্ত অধ্যক্ষ ও মৌলভী শিক্ষকের অপসারণ ও দুর্নীতির বিচার চাই। মাদ্রাসারটির সহকারী অধ্যাপক আনোয়ারুল হক জানান, আমরা লোকমুখে শুনেছি এই মাদ্রাসায় অফিস সহকারী পদে নিয়োগে ১৫ লক্ষ টাকা, বিজ্ঞানাগার সহকারী পদে নিয়োগে ১২ লক্ষ টাকা ও পিয়ন পদে ১২ লক্ষ টাকা নিয়ে নিয়োগবাণিজ্য করেছেন সহকারী মৌলভী শিক্ষক শহিদুল ইসলাম ও অধ্যক্ষ একরামুল হক।
কয়েকদিন আগে একটি অসাভাবিক পরিস্থিতির পর থেকেই অধ্যক্ষ ও সহকারী মৌলভী শিক্ষক গত ১২ সেপ্টেম্বর থেকে প্রতিষ্ঠানে আসছে না। প্রার্থীরা নিয়োগ হওয়ার পরে জানতে পেয়েছেন গোপনে নিয়োগ হয়েছে। প্রতিষ্ঠানে কোন নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। এ বিষয়ে মৌলভী শিক্ষক শহিদুল ইসলাম ফোনে জানান, একটি সুবিধাভোগী শ্রেণি আমার কাছে সুবিধা করতে না পেয়ে এ সব অপবাদ রটাচ্ছে। আমি কোন নিয়োগ বাণিজ্য করিনি। আমাদেরকে জোর করে ফাঁকা স্ট্যাম্পে সিগনেচার করে নিয়েছে। আমাদের নিরাপত্তার না থাকায় আমরা প্রতিষ্ঠানে যাচ্ছি না। এ বিষয়ে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেছি। প্রশাসনিক সহযোগিতা পেলে আমরা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমে পুনরায় অংশগ্রহণ করবো। গঙ্গাচড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এস আর ফারুক জানান, মাদ্রাসায় আন্দোলনের বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। আমার কাছে এখনো কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করলে আমি তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।