তালহা চৌধুরী রুদ্র (ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি)
দেশের একটি জাতীয় দৈনিকে ও একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে কুমিল্লা মুরাদনগরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সিফাত উদ্দিনের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের পর তিনি কাজী নোমান আহমেদ ডিগ্রী কলেজ ছাত্রদের তার পক্ষে মাঠে নামিয়ে আন্দোলন করিয়েছেন। ইউএনও ওই কলেজের সভাপতির দায়িত্ব রয়েছেন। সোমবার (০৯ সেপ্টেম্বর) সকালে শিক্ষার্থীদের কলেজের শ্রেণি কার্যক্রম থেকে বিরত রেখে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করানো হয়। এর আগে শনিবার ইউএনওর অনিয়ম দুর্নীতি নিয়ে দৈনিক যুগান্তর ও অনলাইন নিউজ পোর্টাল প্রতিসময়ে খবর প্রকাশিত হয়। শিক্ষার্থীদের ইউএনও কর্তৃক নিজের স্বার্থে ব্যবহারের বিষয়টি জেলা জুড়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। অবিলম্বে ওই কর্মকর্তার অপসারণের দাবি উঠেছে।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্বনয়ক রুবেল হোসেন বলেন, মুরাদনগরে ইউএনও তার নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য সাংবাদিকের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করালো। এর মাধ্যমে বুঝা যাচ্ছে স্বাধীন সাংবাদিকতায় তিনি প্রতিবন্ধকতা তৈরী করছেন। যারা আজকে মিছিল করেছে তারা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র সংগঠনের কেউ নয়। ইউএনওর এই ধরনের কোন রাইট নেই। অনিয়ম দুর্নীতি পত্রিকায় প্রকাশিত হলে তিনি তা আইনগতভাবে মোকাবেলা করতে পারেন কিন্তু ছাত্রদেরকে এভাবে ব্যবহার করা মোটেও সমীচীন হয়নি। বিষয়টি নিয়ে আমরা সর্বোচ্চ পর্যায়ে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পরামর্শ দিবো।
কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সভাপতি কাজী এনামুল হক ফারুক বলেন, ইউএনও সিফাত উদ্দিন নিজের অপকর্ম আড়াল করতে শিক্ষার্থীদেরকে ব্যবহার করেছেন। তিনি তা কখনো করতে পারেনা। তিনি কলেজের সভাপতি বলে কী যার তার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদেরকে উসকে দেবেন? আমরা এ বিষয়ে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের যথাযথ পদক্ষেপ চাই। কুমিল্লা প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হাসান বলেন, ইউএনওর কোন অভিযোগ থাকলে তা গঠনমূলক প্রক্রিয়ায় আইনি ব্যবস্থা নিতে পারেন। সংবাদের প্রতিবাদ দিতে পারেন। কিন্তু নিজে কলেজের সভাপতি বলে শিক্ষার্থীদেরকে রাস্তায় নামিয়ে দিবেন, এটা কোন পেশাদারী আচরণ হতে পারে না। এটা করে তিনি প্রশাসনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছেন।
কুমিল্লার জেলা প্রশাসক খন্দকার মোঃ মুশফিকুর রহমান বলেন, আমি ইউএনওকে ফোন করে এসব করতে মানা করেছি। বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখছি। উল্লেখ্য, কুমিল্লা-৩ (মুরাদনগর) আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি আত্মগোপনে থাকা জাহাঙ্গীর আলম সরকার ও মুরাদনগর উপজেলা পরিষদের অপসারিত চেয়ারম্যান আহসানুল আলম সরকার কিশোরের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিতি রয়েছে ইউএনও সিফাত উদ্দিনের। অভিযোগ রয়েছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় আওয়ামী লীগের ওই দুই নেতার (পিতা-পুত্র) তথা দলটির পক্ষাবলম্বন করেছিলেন ইউএনও সিফাত উদ্দিন।