বাবুল রানা (টাঙ্গাইল প্রতিনিধি)
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব। গতকাল বিজয়া দশমীর দিনে মা দূর্গাকে বিদায় জানাতে ভক্তগন, দেবীর পায়ে সিঁদুর ছোঁয়ার পর সেই সিঁদুর দিয়ে প্রিয়জনের মুখ রক্ত জঁবায় রাঙ্গিয়ে – ঢাকের তালে নেচে গেয়ে মা দুর্গাকে বিদায় জানালো মধুপুরের সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। রবিবার (১৩ অক্টোবর) বিকালে টাঙ্গাইলের মধুপুরের মদন গোপাল আঙ্গিনার কেন্দ্রীয় মন্দিরের সামনে, মা দূর্গাকে বিদায় জানাতে সিঁদুরের পসরা হাতে ভক্তদের উপস্থিতি ছিলো চোখে পড়ার মতো।
মধুপুরের মন্দির গুলোতে সকাল থেকেই ছিলো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উপচেপড়া ভিড়। সকালে বিজয়া দশমীর পূজা শেষে মণ্ডপে মণ্ডপে চোখে পড়ে ভক্তদের মুখে বিষাদের ছায়া। উলুধ্বনি, শঙ্খ আর ঢাকঢোলের বাজনায় ছিলো দেবী দুর্গার বিদায়ের বিষাদের সুর। গত ৩ অক্টোবর দেবী দুর্গার আবাহন বা মহালয়ার মধ্যদিয়ে দেবী পক্ষের যাত্রা শুরু হয়। আর মহাষষ্ঠী পূজার মধ্যদিয়ে ৯ অক্টোবর শুরু হয় শারদীয় দুর্গাপূজা। এরপর হাসি-আনন্দ আর পূজা অর্চনার মধ্য দিয়ে কেটে যায় চারটি দিন। বিজয়া দশমীতে ‘বিহিত পূজা’ আর ‘দর্পণ বিসর্জনের’ মধ্যদিয়ে বিদায় জানানো হলো দেবী দুর্গাকে। আর প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে শেষ হলো সনাতন সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা।
দেবীদূর্গার বিসর্জন অনুষ্ঠানে হাজারো ভক্তদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার(প্রসাশন) জুবায়ের হোসেন, উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভুমি) রিফাত আনজুম পিয়া, আর্মি ক্যাম্পের ক্যাপ্টেন মাইদুল ইসলাম, থানা ইনচার্জ এমরানুল কবীর, সমাজ সেবা অফিসার মোস্তফা হোসাইন, মধুপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার বোরহান উদ্দিন, মধুপুর উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি আঃ হামিদ, সাধারণ সম্পাদক বাবুল রানা, পূজা উৎযাপন পরিষদের সভাপতি বাবু সুশীল কুমার দাস, সাধারণ সম্পাদক সাধন মজুমদার সহ আরো অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
পঞ্জিকা অনুযায়ী, এবার দেবী মর্ত্যে এসেছেন দোলায় চড়ে শান্তির বানী নিয়ে, এবং আজ বিজয়া দশমীতে দেবী মর্ত্য ছাড়লেন ঘোটকে (ঘোড়ায় চড়ে)। এবারের দেবীদুর্গার দোলায় বসে আসা এবং ঘোটকে চড়ে মর্তে যাওয়াকে মনোকামনা বা মনোবাসনা পূর্ণ হওয়াকে বোঝায়। অর্থাৎ ধরিত্রী হয়ে ওঠে শস্য শ্যামলা সোনালী ফসল। কিন্তু সেই সঙ্গে অতি বর্ষণ বা প্লাবনের আশঙ্কাও দেখা যায়।
পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাধন মজুমদার জানান, এবার মধুপুর উপজেলায় মোট ৫২টি পূজা মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মধুপুর উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতা ও মধুপুর থানা ইনচার্জ এমরানুল কবীরের দিকনির্দেশনায়, পুলিশের সার্বক্ষনিক মোটরসাইকেল মহড়ার কারণে, উপজেলার কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। উপজেলা প্রশাসনের উপস্থিতিতে আজ মা’দূর্গার বিসর্জন শান্তিপূর্ণ ভাবে শেষ হলো বলে তিনি জানান।