নিজস্ব প্রতিনিধি (গাজীপুর)
গত ২৬ মার্চ গাজীপুর সদর থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) জহিরুল ইসলাম, এক নারীকে আটক করে বেধড়ক মারধর করে, এবং ৫লাখ টাকা দাবি করেন বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীর পরিবার। চাহিদা অনুযায়ী টাকা না দেওয়ায় মাদক মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে জেল হাজতে মাদক মামলায় চালান করে দেওয়া হয়েছিলো। গাজীপুর মহানগরীর লক্ষ্মীপুরা এলাকায় গত ২৬ মার্চ রাতে এ ঘটনা ঘটে। গ্রেপ্তারকৃত ওই নারী হলেন গাজীপুর মহানগরীর লক্ষ্মীপুরা এলাকার, জুলহাস হোসেনের স্ত্রী তাহমিনা বেগম (৪৮)।
তার ছেলে জুয়েল রানা বলেন, আমি চার বছর ধরে ইন্টারনেটের ব্যবসা করি। এর মধ্যে রিপন নামের এলাকার এক ব্যাবসায়ী লাইন চালাবেননা বলে আমার কাছে ৩৫টি লাইন বিক্রি করেন। এর কিছুদিন পরে রিপনের ভাই মিজান আমাকে ব্যবসা ফেরত দিতে বলেন। আমি অস্বীকার করলে পুলিশ দিয়ে মাদক মামলায় ফাসাবেন এবং ভিবিন্ন হুমকি দেন। গত ২৬মার্চ রাতে আমার মা আমার বোনের কাপরের দোকানে বসেছিলেন, এমন সময় এএসআই জহিরুল এসে আমার মাকে দোকান থেকে ধরে নিয়ে যায়। পরে আমাকে এএসআই জহিরুল ফোন করে বলেন, তোর মাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার কাছে হেরোইন পাওয়া গেছে, ৫লাখ টাকা দিতে পারলে ছেড়ে দেব, নাহলে মাদক মামলায় চালান করে দেব। জুয়েল বলেন, আমার কাছে এত টাকা ছিলোনা। পরে মা ও ছোট বোনের গহনা বন্ধক রেখে, ২লাখ টাকা এএসআই জহিরুল এর কাছে দেই। তিনি বলেন বাকি ৩ লাখ টাকা নিয়ে আসলে তারপর তোর মাকে ছেড়ে দিবো। বাকি টাকার ব্যাবস্থা করতে না পারায়, আমার মাকে তারা ভিবিন্নভাবে নির্যাতন ও মারধর করেন এবং পরবর্তীতে মিথ্যা মাদক মামলায় আমার মাকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করেন। তাহাকে মারধর করার কারনে তিনি কোর্ট হাজতে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। তাহমিনার মেয়ে রুনা খাতুন বলেন, ২ লাখ টাকা নিয়েও তারা আমার মাকে ছেড়ে দেয়নি। এ ব্যাপারে পুলিশ কমিশনারের কাছে অভিযোগ করলে তিনিও কোনো পদক্ষেপ নেননি।
বিনা অপরাধে হাজত বাসে থাকার কারনে সঠিক চিকিৎসা পাননি, এখনো তিনি অসুস্থ এবং চিকিৎসাধিন অবস্থায় আছেন। বিজ্ঞ আদালত তাকে জামিন দিয়েছেন। জামিন পেয়ে ভুক্তভোগী তাহমিনা বেগম তাহাকে মিথ্যা মামলায় অপরাধী, মারধর, চাঁদাবাজি এবং তাহার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে, গাজীপুরের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে, ১- এএসআই জহিরুল ইসলাম (সদর মেট্রো থানা, গাজীপুর মহানগর), ২- এএসআই মোঃ আব্দুর রশিদ (সদর মেট্রো থানা, গাজীপুর মহানগর), ৩- মোসাঃ লতা আক্তার (নারী কনস্টেবল), ৪- মোসাঃ শান্তা আক্তার (নারী কনস্টেবল), ৫- এএসআই মোঃ আবু ছাইদ (সদর মেট্রো থানা, গাজীপুর মহানগর), ৬- মোঃ আমিনুল ইসলাম(৩৩), পিতা- মোঃ আবুল হোসেন (উওর খাইলকৈর, গাছা, গাজীপুর মহানগর), ৭- মোঃ মাসুদ পারভেজ(৩২), পিতা- মোঃ কমোর উদ্দিন (সালনা, সদর মেট্রো, গাজীপুর মহানগর) ৮- মিনহাজুল আবেদিন (কনক), সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী আওয়ামী যুবলীগ, পিতা- মোঃ হারুন অর রশিদ (লক্ষিপুরা, সদর মেট্রো, গাজীপুর) সহ অজ্ঞাত নামা ৩/৪ জনকে আসামি করিয়া মামলা দায়ের করেছেন। আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি, গাজীপুর) প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। ভুক্তভোগী সহ তাহার পরিবার ও এলাকার সাধারণ জনগণ বিষয়টির সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানিয়েছেন।