আঃ রহিম (রংপুর প্রতিনিধি)
রোপা আমন মৌসুমের রংপুর সদর উপজেলার ধান গাছের ইদুর তাড়ানো নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন চাষিরা। রংপুর সদর উপজেলার আগাম জাতের কিছু ধান কাটা মাড়াই শুরু করেছে চাষিরা। এখনও অনেক ধানগাছের শীষ বেরোতে শুরু করেছে, ঠিক সেই সময় ধানের গাছ ইঁদুরে কেটে সাবাড় করছে। ফলে ইদুরের তাড়ানো নিয়ে ধান চাষিরা বিপাকে পড়েছে।
গতকার রংপুর সদর উপজেলার, বিভিন্ন ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকায় ঘুরে কথা হয় হরকলি এলাকার ধান চাষি রানা বলেন, আমার জমিতে পানি থাকার পরেও জমির রাতের অন্ধকারে ইদুর জমিতে নেমে এসে ধানের গাছ কাটে। কোনো কীটনাশক ঔষধও মানছে না ইদুর। রাত জেগে পাহাড়া দিয়েও কোনো লাভ হচ্ছে না। প্রায় জমিতেই ইদুর ধান কাটছে। জমিতে বিষপ্রয়োগ করেও ইদুর দমন করা সম্ভব হচ্ছে না। মমিনপুর ইউনিয়নের ,মহেশপুর গ্রামের আবু মিয়া বলেন, ৫ শতক জমির ধানের গাছ ইদুর কেটে সাবাড় করেছে। ইদুর কোনো কিছুই তোয়াক্কা করে না। প্রতিদিন আমি ধানের কাটা গাছগুলো বেড় করে গোখাদ্য হিসাবে চালিয়ে দিচ্ছি । সাবাজপুর গ্রামের দুই জন কৃষক জানান, আমার ধানের গাছের শীষ বাহির হবে বড় বড় হয়েছে, ইদুর গাছের মাঝখানে কেটে দিচ্ছে আমরা কোনো ঔষধ খুঁজে পাচ্ছিনা।
ধানের আবাদ নিয়ে বড় চিন্তায় আছি। পাগলাপীর গ্রামের মোসলেম উদ্দিন বলেন, ধান চাষের মৌসুমের শুরুতেই জমিতে সেচের পানি দিয়ে আগেভাগেই ধানের চাষ করেছি অনেক টাকা খরচ। আশা করি ফলন ভালোই পাব কিন্তু ইদুর ধানের গাছ কেটে সাবাড় করছে। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ও ইঁদুর আমাদের স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত করছে। বেশির ভাগ এলাকায় ধানের জমিতে ইঁদুরের উৎপাত বেড়ে গেছে। দলবদ্ধ ইঁদুর ধান খেতের মাঝে গিয়ে থোড় আসা ধান কেটে ফেলছে। ইঁদুর নিধনে নানা ধরনের ফাঁদ পাতলেও কোনো প্রতিকার মিলছে না। রাতের বেলায় জমির চারপাশে ঢাকঢোল পিটিয়েও এদেরকে দমন করা যাচ্ছে না। রংপুর সদর উপজেলার অনেক চাষী সাংবাদিকে জানান আমরা রাতের বেলায় জমির চারপাশে ঢাক ঢোল পিটিয়েও এদেরকে দমন করা যাচ্ছে না। এদিকে ইদুর মারার জন্য বিভিন্ন তৈরি ফাদ বানিয়ে সেখানে খাদ্য দিয়ে জমিতে ফেলিয়ে রাখি, সেই ফাঁদে অনেক ইদুর মারা যায় তার পরেও ইদুর কমে না।
রংপুর সদর উপজেলা কৃষি অফিসার আবু মোঃ মনিরুজ্জামান বলেন, উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে এ ধরনের খবর পেয়েছি। প্রতিটি ইউনিয়নে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা রয়েছেন। তাঁরা প্রতিদিন মাঠে গিয়ে কৃষকদের ইঁদুর মারার পদ্ধতি দেখিয়ে দিচ্ছেন। মাঠ পর্যায়ে ইদুর মারতে বাঁশের ফাঁদ ব্যবহারে করা হচ্ছে আর এটি যান্ত্রিক পদ্ধতি। আর এ ধরণের অনেক যান্ত্রিক ফাঁদ ব্যবহার করা হচ্ছে ধানের জমিতে। যান্ত্রিক পদ্ধতির মাধ্যমে প্রতিদিন অনেক ইদুর মারছে চাষিরা। কৃষি অফিসার আবু মোঃ মনিরুজ্জামান আরো বলেন সবাইকে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে এবং জমির চারপাশে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।